ফরিদপুরে উপড়ে ফেলা হলো চো*খ এবং যুবককে কুপিয়ে হ*ত্যা
ওবায়দুরের বাবা বাকরুদ্ধ,মা অজ্ঞান এবং স্ত্রীর কান্নায় ভারী আকাশ বাতাস।
- Update Time : ৫ ঘন্টা আগে
- / ৪ Time View
১১ জানুয়ারি ২
ওবায়দুর রহমানকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করাতেই জীবন দিতে হলো। অত্র এলাকায় মাদকসহ নানা অসঙ্গতির প্রতিবাদ করাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মহাসড়কে মর*দেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেএলাকাবাসী।
এদিকে ৬ মাস বয়সী শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে কান্না থামছে না ওবায়দুরের স্ত্রী সুইটি বেগমের।
ওবায়দুর রহমান সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে।
তিনি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী ছিলেন।
ছেলে জুনায়েদকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন সুইটি বেগম। ছেলের এমন মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বাবা বিল্লাল খান ও মা রেখা বেগম। কাঁদছে স্বজন ও এলাকাবাসী। পুরো গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ওবায়দুরের স্বজনদের অভিযোগ, খায়রুজ্জামান ওরফে খাজা দীর্ঘ ২০ বছর কানাইপুর সহ আশপাশের অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছিল। বিভিন্ন সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো ওবায়দুর। এরই জের ধরে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনে একটি ফিলিং স্টেশনে মোটর সাইকেলে পেট্রোল নিতে গেলে সেখান থেকে অটোরিকশা ও মোটর সাইকেলে সন্ত্রাসী খাজা ও তার বাহিনী তুলে নেয় যুুবক ওবায়দুর রহমানকে ।তার ওপর চালায় অমানসিক নির্যাতন। চোখ খুঁচিয়ে, হাত-পা সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ভেঙে দেয়।
প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান ওবায়দুর।
ওবায়দুরের স্ত্রী সুইটি বেগম বলেন, আমার স্বামী একজন কাঠমিস্ত্রী। একজন ভালো মানুষ ছিল। আমার স্বামী অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো, এটাই তার অপরাধ। এ কারণে তাকে জী*বন দিতে হলো। আমার বিয়ে হয়েছে দুই বছর হলো। ৬ মাস বয়সী একটি সন্তান আছে। ও বাবা ডাকার আগেই তার বাবা চলে গেল। আমাকে আর ছেলেকে এতিম করে চলে গেল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীকে এর আগেও একাধিকবার ধাওয়া দেয় খাজা ও তার লোকজন। কিন্তু এবার তার জীবনটাই নিয়ে নিলো। আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর সে বলেছিল আমাকে প্রাণে মারিস না, প্রয়োজন হলে হাত পা কেটে দে। কিন্তু ওরা তা শুনেনি, আমার স্বামীর প্রাণটাই নিয়ে নিলো। নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেছে। খাজাসহ যারা এ হ*ত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের গ্রেফতার করে ফাঁ”সি চাই।
নিহতের মা রেখা বেগম কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন, জ্ঞান ফিরলেই বুক চাপড়ে আর্তনাদ করছেন। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাইছেন।
নিহতের বড় ভাই রাজিব খান বলেন, খাজা একজন ভয়ংকর সন্ত্রা’সী। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে শেষ করে দেয়। আমার ভাই তার অপকর্মের প্রতিবাদ করেছিল এ কারণে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো। দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা না হলে আরও মায়ের বুক খালি হবে।
অন্যদিকে মর’দেহের ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মরদেহ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুর বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় তারা।
বিকেলে মর*দেহ বাড়িতে নেওয়া হলে হাজারো মানুষ ভিড় করে। বাদ মাগরিব ঝাউখোলা গ্রামে নিজ বাড়ির আঙিনায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাদার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
ফরিদপুরে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ওবায়দুরের দাফনের কারণে এখনও তার পরিবার মামলা দায়ের করেনি। রাতের মধ্যেই মামলা দায়ের করবে। হ*ত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তারা ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের গ্রেফতারে একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে।
প্রকাশ : ১১/১/২০২৫/সুরমা টিভি/ইয়াসমিন