অনলাইন নিউজ ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে; ঠিক সেইভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে হবে। আগে বিচার হবে, সংস্কার হবে, তারপরে নির্বাচন। তার আগে কোনোভাবেই নির্বাচন দেওয়া যাবে না।’ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণ এবং ‘প্রোক্ল্যামেশন অব জুলাই রেগুলেশন’-এ জন-আকাঙ্ক্ষা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়।ছাত্র সমাবেশে সারজিস আলম আরও বলেন, ‘যারা ক্ষমতার লোভে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মানুষের রক্ত ও জীবনকে বিন্দুমাত্র মূল্য দেয় না তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না বাংলাদেশের মানুষ। এই দেশের মানুষের জীবনের দিকে আর যদি কোনও শকুন দৃষ্টি দেয় তাহলে তার চোখ উপড়ে ফেলবো। হোক সে দেশের ভেতরের শক্তি অথবা বাইরের শক্তি।‘আমরা আমাদের শহীদ ভাইদের হত্যার বিচার চাই। শেখ হাসিনা দেশে আসবে, তবে সে দেশে এসে সরাসরি ওই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে, এসে সরাসরি ওই কাঠগড়া থেকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবে। বাংলাদেশে অবশ্যই একটি যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন হবে। তবে তার আগে এই খুনি হাসিনা আমাদের এই দেশের সিস্টেমগুলোকে যে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই সিস্টেমগুলোকে সংস্কার করতে হবে। আমাদের এই বাংলাদেশ আর কোনও নতজানু পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা চোখে চোখ রেখে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করবো। পৃথিবীর কোনও বহির্শক্তি যদি আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের চেষ্টা করে তাহলে আমরা তা ছুড়ে ফেলবো।’তিনি বলেন, ‘আমরা একটি জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিয়েছি। সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকতে হবে। এই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। সেই ঘোষণাপত্রে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।’কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে আরও ব্ক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন– সোহেল রানা, হাসিব-আল ইসলাম, রিফাত রশীদ, আশরেফা, রাজেন্দ্র কলেজ শাখার প্রধান কাজী রিয়াজ, ফারহান আহসান অর্ণব, নাবিলা তালুকদার, তাহসিন হাসান দ্বীন, মাহমুদুল হাসান ওয়ালিদ, সানজিদা রহমান সমতা, জেবা তাহসিন, শাহ মো. আরাফাত প্রমুখ।সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় ফরিদপুরে বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ওই সব সশস্ত্র হামলায় জড়িত অপরাধীরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখনও অনেকে আমাদের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আন্দোলনে আহত অনেকে পারিবারিক কারণে থানায় মামলা করতে পারেনি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আন্দোলনের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’
৭/১/২০২৫/ সুরমা টিভি ২৪/শামীমা