, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে মসজিদ এক রাতেই তৈরি হয়েছিল!

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ১১:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ১৩৯৩ Time View

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

চুয়াডাঙ্গা জেলার ঠাকুরপুর গ্রামে অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, যার ইতিহাস প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। এটি মোঘল আমলে নির্মিত এক গম্বুজ মসজিদ হিসেবে পরিচিত, যার নির্মাণ কাহিনি আজও এলাকার মানুষের মধ্যে আলোচিত।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী ৫০০ বছরের পুরানো স্থাপনা।

মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা শাহ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশ্তী, যাকে আফু শাহ নামেও জানানো হয়, তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে চুয়াডাঙ্গায় এসে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।

এটি একটি প্রাচীন ইসলামী স্থাপত্য নিদর্শন, যা বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। মসজিদটি ত্রিকোণাকৃতিতে নির্মিত এবং ভেতরে দুই কাতারে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও মসজিদটির মূল কাঠামো এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে, তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চারপাশে বড় পরিসরে তিন গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। ১২ বিঘা জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই মসজিদে বর্তমানে নারীদের নামাজ পড়ার আলাদা ব্যবস্থা এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

মসজিদটির ইতিহাস অনুযায়ী, আফু শাহ নদীপথে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাথাভাঙ্গা ও নবগঙ্গা বেয়ে চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে আসেন এবং তিনি এক রাতেই অলৌকিকভাবে এই মসজিদ নির্মাণ করেন বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। এমনকি, অনেকের ধারণা, আফু শাহের অলৌকিক শক্তির কারণেই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। তার জমিদারের দরবারে পৌঁছানোর ঘটনা এবং জমি দান পাওয়ার পর মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মসজিদটি হাতে তৈরি পাতলা ইট ও চুন-সুড়কির গাঁথুনিতে নির্মিত এবং প্রথমে এক গম্বুজ বিশিষ্ট ছিল।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী ৫০০ বছরের পুরানো স্থাপনা।
প্রতি বছর ১২ ফাল্গুনে এখানে ওরস অনুষ্ঠিত হয়, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পরিচিত। এই সময় মসজিদে ধর্মপ্রাণ মানুষরা একত্রিত হন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি কামনা করেন। মসজিদটির চারপাশে নানা ধরনের গাছ গাছালি রয়েছে, যা পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলে।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদে আসলে মন প্রশান্তি পায়। বিশেষ করে, অনেক মানুষ এখানে এসে নামাজ পড়ে, দোয়া-দরুদ পাঠ করে এবং মনের বাসনা পূরণের জন্য পানি বা তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী রেখে যান। মসজিদে আসার জন্য শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলারই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও ধর্মপ্রাণ মানুষজন ছুটে আসেন।

মসজিদে কর্মরত ইমাম মুফতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এই মসজিদটি চুয়াডাঙ্গার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখানে নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। শাহ আফু শাহ ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে এসে এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, যা আজও এখানে ধর্মপ্রাণ মানুষদের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।

মসজিদটির সভাপতি সামসুজ্জামান ডালিম বলেন,এই মসজিদটি স্থানীয়দের দানে পরিচালিত হয়। এখানে এলে আল্লাহর রহমত অনুভূত হয় এবং নামাজ পড়ে যাদের মনের বাসনা পূর্ণ হয়, তারা এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। মসজিদটি চুয়াডাঙ্গার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে এবং এটি বর্তমানে অনেক মানুষের জন্য একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।

পীরগঞ্জ জামে মসজিদ শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, এটি চুয়াডাঙ্গার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার ঐতিহ্য ও গুরুত্ব ধরে রেখেছে।

যে মসজিদ এক রাতেই তৈরি হয়েছিল!

Update Time : ১১:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

চুয়াডাঙ্গা জেলার ঠাকুরপুর গ্রামে অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, যার ইতিহাস প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। এটি মোঘল আমলে নির্মিত এক গম্বুজ মসজিদ হিসেবে পরিচিত, যার নির্মাণ কাহিনি আজও এলাকার মানুষের মধ্যে আলোচিত।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী ৫০০ বছরের পুরানো স্থাপনা।

মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা শাহ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশ্তী, যাকে আফু শাহ নামেও জানানো হয়, তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে চুয়াডাঙ্গায় এসে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।

এটি একটি প্রাচীন ইসলামী স্থাপত্য নিদর্শন, যা বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। মসজিদটি ত্রিকোণাকৃতিতে নির্মিত এবং ভেতরে দুই কাতারে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও মসজিদটির মূল কাঠামো এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে, তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চারপাশে বড় পরিসরে তিন গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। ১২ বিঘা জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই মসজিদে বর্তমানে নারীদের নামাজ পড়ার আলাদা ব্যবস্থা এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

মসজিদটির ইতিহাস অনুযায়ী, আফু শাহ নদীপথে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাথাভাঙ্গা ও নবগঙ্গা বেয়ে চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে আসেন এবং তিনি এক রাতেই অলৌকিকভাবে এই মসজিদ নির্মাণ করেন বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। এমনকি, অনেকের ধারণা, আফু শাহের অলৌকিক শক্তির কারণেই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। তার জমিদারের দরবারে পৌঁছানোর ঘটনা এবং জমি দান পাওয়ার পর মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মসজিদটি হাতে তৈরি পাতলা ইট ও চুন-সুড়কির গাঁথুনিতে নির্মিত এবং প্রথমে এক গম্বুজ বিশিষ্ট ছিল।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত পীরগঞ্জ জামে মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী ৫০০ বছরের পুরানো স্থাপনা।
প্রতি বছর ১২ ফাল্গুনে এখানে ওরস অনুষ্ঠিত হয়, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পরিচিত। এই সময় মসজিদে ধর্মপ্রাণ মানুষরা একত্রিত হন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি কামনা করেন। মসজিদটির চারপাশে নানা ধরনের গাছ গাছালি রয়েছে, যা পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলে।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদে আসলে মন প্রশান্তি পায়। বিশেষ করে, অনেক মানুষ এখানে এসে নামাজ পড়ে, দোয়া-দরুদ পাঠ করে এবং মনের বাসনা পূরণের জন্য পানি বা তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী রেখে যান। মসজিদে আসার জন্য শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলারই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও ধর্মপ্রাণ মানুষজন ছুটে আসেন।

মসজিদে কর্মরত ইমাম মুফতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এই মসজিদটি চুয়াডাঙ্গার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখানে নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। শাহ আফু শাহ ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে এসে এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, যা আজও এখানে ধর্মপ্রাণ মানুষদের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।

মসজিদটির সভাপতি সামসুজ্জামান ডালিম বলেন,এই মসজিদটি স্থানীয়দের দানে পরিচালিত হয়। এখানে এলে আল্লাহর রহমত অনুভূত হয় এবং নামাজ পড়ে যাদের মনের বাসনা পূর্ণ হয়, তারা এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। মসজিদটি চুয়াডাঙ্গার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে এবং এটি বর্তমানে অনেক মানুষের জন্য একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।

পীরগঞ্জ জামে মসজিদ শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, এটি চুয়াডাঙ্গার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার ঐতিহ্য ও গুরুত্ব ধরে রেখেছে।