সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেক্স:
দেশে পারফিউম ব্যবসার আড়ালে সবচেয়ে বড় হুন্ডি তৎপরতার প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) অনুসন্ধান চালিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য পেয়েছে।
হুন্ডি কারবারে অভিযুক্ত কোম্পানিটির নাম আল হারামাইন পারফিউমস। কোম্পানির মালিক সিলেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এ ব্যবসায়ী এখন গোল্ডেন ভিসার আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের তথ্য অনুযায়ী, মাহতাবুর রহমান নাসিরের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বর্তমানে বিশ্বের ৮৬টি দেশে বিস্তৃত। বাংলাদেশ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুম রয়েছে। অন্যান্য দেশে তার দৃশ্যমান ব্যবসা মূলত আমদানি-রফতানির। অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, মাহতাবুর রহমান নাসিরের পুরো ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কই হুন্ডি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পারফিউম বা আমদানি-রফতানি ব্যবসার আড়ালে তার প্রধান ব্যবসা মূলত এক দেশের অর্থ অন্য দেশে পাচার করা।
তদন্ত কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত গোয়েন্দা সেলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুমগুলো মূলত হুন্ডির টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত হয়। ঢাকার বসুন্ধরা সিটির শোরুমে কেউ টাকা জমা দিলে দুবাইয়ের সিটি সেন্টারে সে টাকা দিরহাম আকারে পরিশোধ করা হয়। ছোট কোনো অংকের অর্থ এসব শোরুমে লেনদেন হয় না। বরং বড় ব্যবসায়ী বা টাকা পাচারকারীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকার অর্থ গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে শোরুমগুলোয় কেবল বিশেষ একটি খাতায় হিসাব রাখা হয়। হুন্ডি কারবারের পাশাপাশি মাহতাবুর রহমানের স্বর্ণ চোরাচালানের বিস্তৃত নেটওয়ার্কও রয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
দেড় দশক ধরে মাহতাবুর রহমান নাসির দেশ-বিদেশে একজন আলোচিত চরিত্র। প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করে সিলেটে ‘কাজী প্যালেস’ নামে রাজকীয় বাড়ি নির্মাণ করে প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। বিলাসবহুল ওই বাড়িতে ভিড় জমাতেন মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি আমলারা। সিলেটের ইসলামপুর এলাকায় নির্মাণ করা বাড়িটি নিয়েও নতুন করে তদন্ত করছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।