, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উর্দু ভাষায় আলাপচারিতার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা বলছেন হেফাজত ও বিএনপি নেতা

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • ১৩৯৬ Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
ঘরোয়া আলাপচারিতায় ধর্মীয় বক্তা, হেফাজত ও বিএনপি নেতার উর্দু ভাষায় আলাপচারিতার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এনিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে আলোচিত কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে ২০১৩ সালের পাঁচই মে’র শাপলা চত্বরের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়। এসময় সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদও উর্দু ভাষায় আলাপ এগিয়ে নেন।

আলাপচারিতার সময় আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকসহ আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ভিডিওটি গত বুধবার (১২ই মার্চ) কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর শাখার ইফতার মাহফিলের পর এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনার সময় ধারণ করা হয় বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।

তারা বলছেন, হালকা মেজাজের ঘরোয়া আলোচনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া এবং সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে আলাপ-আলোচনার কিছু নেই।

তবে তাদের মতে গুরুত্ব দেয়ার কিছু না থাকলেও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনিয়ে দেখা গেছে নানা প্রতিক্রিয়া।

আর উর্দুর ভাষার সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকেই এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
কী আলাপ করছিলেন তারা?
৩৮ সেকেন্ডের ভিডিওটির বেশিরভাগ অংশজুড়েই ধর্মীয় বক্তা কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে ২০১৩ সালের পাঁচই মে নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়।

১১ বছর আগের সেই দিনটিতে কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ও নারী নীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবিতে ঢাকা অবরোধ এবং শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়েছিল দিনভর উত্তেজনা ও সহিংসতা।

আলাপচারিতায় সেই প্রসঙ্গ টেনে কাজী ইব্রাহিম বলেন, “৫ই মে জো কাতালে আম হুয়া ভোহা মে মজুদ থা। আখরি শাকস জো স্টেজ সে উৎরা ভো মে থা। তাব মৌলানা সাইদুর রহমান মুঝকো ওয়াহা উঠা লিয়া”।

বাংলা করলে যার অর্থ দাঁড়ায়, “৫ই মে যখন গণহত্যা চলছিল তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। স্টেজ থেকে নামা শেষ ব্যাক্তিও আমি ছিলাম। তখন মাওলানা সাইদুর রহমান আমাকে ওখান থেকে তোলেন”।

তার পরপরই মামুনুল হক “মগার” বা “কিন্তু” দিয়ে শুরু করে কিছু একটা বলেন যেটা ভিডিওতে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না।

সেখান থেকে কাজী ইব্রাহিম আবারও বলা শুরু করেন, “ভো এক বাত হ্যায়, মুসলমান যাব কাতিল কে সাথ হাত জোর লেতে হ্যায় না তাব মুসলমান হার যাতে হ্যায়” অর্থাৎ “একটা কথা আছে যে মুসলমান যখন হত্যাকারীর সঙ্গে হাত মেলায় তখন মুসলমান হেরে যায়”।

এরপর বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সুনিয়ে জানাব, আগার হাম মওকে কা বাত কারতে হ্যাঁ তো ইস মওকে কো আগার হাম ইস্তেমাল নেহি কারে তো হাম…”

যার অর্থ দাঁড়ায় “শুনুন জনাব, যদি আমি সুযোগের কথা বলি তাহলে আমরা যদি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার না করি তবে…” – এটুকু বলেই যারা ভিডিও করছে তাদের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে তিনি কিছু একটা বলতে শুরু করলে ভিডিও শেষ হয়ে যায়।

এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে সেদিন আলোচনার সময় উপস্থিত থাকা হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, ইফতারের পর একটি ঘরে বসলে কেউ সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে উর্দুতে কথা বলে।

“সালাহউদ্দিন সাহেবতো উর্দুতে অনেক পারদর্শী। তখন এটাকে উনি উর্দুতে রিপ্লাই (জবাব) দেন এবং ওখানে দুই-এক মিনিটের মতো উর্দুতে কথা হয়। ওই ক্লিপটাকেই ধরা হয়েছে, আর কিছুই না”।

“সালাহউদ্দিন ভাই বলতেছিলো এরকম যে আপনারা হুজুররা অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত। আপনারা যদি এত বিভক্ত হন আমরা যারা হুজুর না, আমরা কোন পথে যাব- এই টাইপের মনে হয় কোনো একটা কথা বলতেছিলো। তখন এইটাকে উর্দুতে বলছে আর কি”, বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় ছেড়ে এসব নিয়ে আলাপকে সময় নষ্ট বলেই মনে করেন বিএনপি নেতা মি. আহমদ।

তিনি বলেন, “আমার কষ্ট লাগে যে, এসময়টা অনেক ভালো ভালো কাজে ব্যয় করতে পারি, এভাবে ক্রিটিসাইজ (সমালোচনা) করার কিছুতো নাই”।

১৬/৩/২০০২৫/ সুরমা টিভি/শামীমা

উর্দু ভাষায় আলাপচারিতার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা বলছেন হেফাজত ও বিএনপি নেতা

Update Time : ০৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
ঘরোয়া আলাপচারিতায় ধর্মীয় বক্তা, হেফাজত ও বিএনপি নেতার উর্দু ভাষায় আলাপচারিতার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এনিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে আলোচিত কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে ২০১৩ সালের পাঁচই মে’র শাপলা চত্বরের কর্মসূচি নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়। এসময় সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদও উর্দু ভাষায় আলাপ এগিয়ে নেন।

আলাপচারিতার সময় আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকসহ আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ভিডিওটি গত বুধবার (১২ই মার্চ) কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর শাখার ইফতার মাহফিলের পর এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনার সময় ধারণ করা হয় বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।

তারা বলছেন, হালকা মেজাজের ঘরোয়া আলোচনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া এবং সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে আলাপ-আলোচনার কিছু নেই।

তবে তাদের মতে গুরুত্ব দেয়ার কিছু না থাকলেও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনিয়ে দেখা গেছে নানা প্রতিক্রিয়া।

আর উর্দুর ভাষার সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকেই এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
কী আলাপ করছিলেন তারা?
৩৮ সেকেন্ডের ভিডিওটির বেশিরভাগ অংশজুড়েই ধর্মীয় বক্তা কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে ২০১৩ সালের পাঁচই মে নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়।

১১ বছর আগের সেই দিনটিতে কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ও নারী নীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবিতে ঢাকা অবরোধ এবং শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়েছিল দিনভর উত্তেজনা ও সহিংসতা।

আলাপচারিতায় সেই প্রসঙ্গ টেনে কাজী ইব্রাহিম বলেন, “৫ই মে জো কাতালে আম হুয়া ভোহা মে মজুদ থা। আখরি শাকস জো স্টেজ সে উৎরা ভো মে থা। তাব মৌলানা সাইদুর রহমান মুঝকো ওয়াহা উঠা লিয়া”।

বাংলা করলে যার অর্থ দাঁড়ায়, “৫ই মে যখন গণহত্যা চলছিল তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। স্টেজ থেকে নামা শেষ ব্যাক্তিও আমি ছিলাম। তখন মাওলানা সাইদুর রহমান আমাকে ওখান থেকে তোলেন”।

তার পরপরই মামুনুল হক “মগার” বা “কিন্তু” দিয়ে শুরু করে কিছু একটা বলেন যেটা ভিডিওতে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না।

সেখান থেকে কাজী ইব্রাহিম আবারও বলা শুরু করেন, “ভো এক বাত হ্যায়, মুসলমান যাব কাতিল কে সাথ হাত জোর লেতে হ্যায় না তাব মুসলমান হার যাতে হ্যায়” অর্থাৎ “একটা কথা আছে যে মুসলমান যখন হত্যাকারীর সঙ্গে হাত মেলায় তখন মুসলমান হেরে যায়”।

এরপর বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সুনিয়ে জানাব, আগার হাম মওকে কা বাত কারতে হ্যাঁ তো ইস মওকে কো আগার হাম ইস্তেমাল নেহি কারে তো হাম…”

যার অর্থ দাঁড়ায় “শুনুন জনাব, যদি আমি সুযোগের কথা বলি তাহলে আমরা যদি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার না করি তবে…” – এটুকু বলেই যারা ভিডিও করছে তাদের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে তিনি কিছু একটা বলতে শুরু করলে ভিডিও শেষ হয়ে যায়।

এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে সেদিন আলোচনার সময় উপস্থিত থাকা হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, ইফতারের পর একটি ঘরে বসলে কেউ সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে উর্দুতে কথা বলে।

“সালাহউদ্দিন সাহেবতো উর্দুতে অনেক পারদর্শী। তখন এটাকে উনি উর্দুতে রিপ্লাই (জবাব) দেন এবং ওখানে দুই-এক মিনিটের মতো উর্দুতে কথা হয়। ওই ক্লিপটাকেই ধরা হয়েছে, আর কিছুই না”।

“সালাহউদ্দিন ভাই বলতেছিলো এরকম যে আপনারা হুজুররা অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত। আপনারা যদি এত বিভক্ত হন আমরা যারা হুজুর না, আমরা কোন পথে যাব- এই টাইপের মনে হয় কোনো একটা কথা বলতেছিলো। তখন এইটাকে উর্দুতে বলছে আর কি”, বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় ছেড়ে এসব নিয়ে আলাপকে সময় নষ্ট বলেই মনে করেন বিএনপি নেতা মি. আহমদ।

তিনি বলেন, “আমার কষ্ট লাগে যে, এসময়টা অনেক ভালো ভালো কাজে ব্যয় করতে পারি, এভাবে ক্রিটিসাইজ (সমালোচনা) করার কিছুতো নাই”।

১৬/৩/২০০২৫/ সুরমা টিভি/শামীমা