সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিতের পাশাপশি, সভা-সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনগুলো। এদিকে ধর্ষণের শিকার নারী-পুরুষ সকলেরই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা নেয়া উচিত বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মাহবুবুর রহমান।এছাড়াও যৌন নির্যাতন, বিপজ্জনক শ্রম, অবহেলা এবং অনলাইন সহিংসতা কমিয়ে আনতে শিশুদের জন্য আলাদা অধিদফতর গড়ার পাশাপাশি ‘শিশু বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। সম্প্রতি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া শিশু ও নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা। তারা দাবি জানিয়েছে, ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতসহ আইনের যথাযথ প্রয়োগের ব্যবহার বাড়িয়ে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। রোববার (১৬ মার্চ) সকালে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মাগুরা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে সেভ দ্যা উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন নামের একটি সংগঠন। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সংগঠনটির কর্মকর্তা কর্মচারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা মাগুরার সেই শিশুটি হত্যার দ্রুত বিচারের দাবি জানান। এদিকে, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ভোলায় একই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করে সচেতন নাগরিক কমিটি। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সব ধর্ষণ ও নির্যাতনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনেও ‘শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় শিশু অধিকার বিষয়ক এনজিওদের প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এসময় বক্তারা বলেন, সরকারের উচিত শিশুদের জন্য আলাদা অধিদফতর গড়ার পাশাপাশি ‘শিশু বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা। ধর্ষণ না বললে যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের ব্যাপারটা হারিয়ে যাবে। তাই ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এটা বাদ দেয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা৷ একই বিষয়ে দুপুরে রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে ধর্ষণে: শিশু-কিশোর মনে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ প্রভাব শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট মেন্টাল হেলথ। যৌন সহিংসতা দীর্ঘ মেয়াদী মানসিক ক্ষতির কারণ, যা ব্যক্তির পুরো জীবনকে প্রভাবিত ও পরিবর্তন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। এসময় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী-পুরুষ সকলেরই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা নেয়া উচিত। এসময় ধর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। শুধু নারী নয় ছেলে শিশুরাও বলাৎকারের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো। আইন ও শালিশ কেন্দ্রের সূত্র বলছে, ২০২৪ সালে ৩৬ জন ও ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসে ৪ জন মোট ৪০ জন ছেলে শিশু বলাৎকারের শিকার হয়েছে।