, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেলস্টেশন অবরোধ,বি-বাড়িয়ার হাজার দশেক যাত্রীর জন্য মাত্র ৬০০ টিকিট।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪০৬ Time View

অনলাইন নিউজ ডেক্স:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে সবকটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতিরসহ ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া পথে একটি আন্তঃনগর স্পেশাল ট্রেন প্রদানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন অবরোধ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বস্তরের মানুষ। সম্মিলিত সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠনের ব্যানারে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে চলা অবরোধ কর্মসূচি।

অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সূবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পরে। শেষে প্রশাসনের আশ্বাসের পর প্রায় আধঘণ্টা পর ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

অবরোধ কর্মসূচীতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুবারক হোসাইন বলেন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন গড়ে দশ থেকে বারো হাজার যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে। তার বিপরীতে মাত্র ৬০০ টিকেট এখানে বরাদ্দ করা হয়েছে, এই অল্প পরিমাণ টিকেটে আমাদের কোনো ভাবেই চলে না। তাই আমাদের দাবি কালোনী, উপবন ও বিজয় এই তিনটি ট্রেন যেন জরুরি ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে স্টপেজ দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যে নরসিংদী কম্পিউটার নামে একটি ট্রেন ভৈরব থেকে ছেড়ে ঢাকায় যাবে বলে আমরা জেনেছি। এই ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে যাত্রা যেন শুরু করা হয় এই দাবি আমাদের। রাজধানীর সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যোগাযোগ সহজ করার জন্যে আমরা সাত বছর ধরে আন্দোলন করছি। দাবি পূরণ না হলে আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মমিনুল হক জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে যাতায়ত করে থাকেন। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের জন্যে মাত্র ৭০০ আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপর দিয়ে দৈনিক ৪৮টি ট্রেন চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে মাত্র ১২টি ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে।

অধিক যাত্রী চাপ সামাল দিতে এবং রেলওয়ের রাজস্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে চলাচলকারী সবকটি আন্তঃনগর ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতি ও ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলপথে একটি আন্তঃনগর স্পেশাল ট্রেন প্রদানের দাবি জানান তিনি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রাজিব হাসান চৌধুরী পাপ্পু জানান, ঢাকা চট্টগ্রামের পরে সবচেয়ে ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন। সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আমরা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে দিয়ে থাকি। রেলওয়ে সংস্কার করে আমাদের যে দাবি সে দাবি যেন মেনে নেয়া হয়।

বি-বাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের এই বি-বাড়িয়া স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। বি-বাড়িয়াতে প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার লোক আসা যাওয়া করে। এইখানে প্রায় ছয় জোড়ার ট্রেন যাত্রা বিরতি দেয়। এছাড়া নন স্টপেজ মিলিয়ে প্রত্যেকদিন প্রায় ২৪ জোড়া ট্রেন আসা যাওয়া করে। আমরা যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে টিকেট সরবরাহ করতে পারি না। এতে করে আসন বিহীন টিকেটে যাত্রীদের আসা-যাওয়া করতে হয়। তাদের এই আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আগেই অবগত করেছি। এখন আবারো পুনরায় অবগত করব।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূইয়া ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফর হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পরে আন্দোলনরতদের দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার আশ্বাস দিলে রেলপথ থেকে অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

রেলস্টেশন অবরোধ,বি-বাড়িয়ার হাজার দশেক যাত্রীর জন্য মাত্র ৬০০ টিকিট।

Update Time : ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অনলাইন নিউজ ডেক্স:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে সবকটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতিরসহ ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া পথে একটি আন্তঃনগর স্পেশাল ট্রেন প্রদানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন অবরোধ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বস্তরের মানুষ। সম্মিলিত সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠনের ব্যানারে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে চলা অবরোধ কর্মসূচি।

অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সূবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পরে। শেষে প্রশাসনের আশ্বাসের পর প্রায় আধঘণ্টা পর ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

অবরোধ কর্মসূচীতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুবারক হোসাইন বলেন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন গড়ে দশ থেকে বারো হাজার যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে। তার বিপরীতে মাত্র ৬০০ টিকেট এখানে বরাদ্দ করা হয়েছে, এই অল্প পরিমাণ টিকেটে আমাদের কোনো ভাবেই চলে না। তাই আমাদের দাবি কালোনী, উপবন ও বিজয় এই তিনটি ট্রেন যেন জরুরি ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে স্টপেজ দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যে নরসিংদী কম্পিউটার নামে একটি ট্রেন ভৈরব থেকে ছেড়ে ঢাকায় যাবে বলে আমরা জেনেছি। এই ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে যাত্রা যেন শুরু করা হয় এই দাবি আমাদের। রাজধানীর সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যোগাযোগ সহজ করার জন্যে আমরা সাত বছর ধরে আন্দোলন করছি। দাবি পূরণ না হলে আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মমিনুল হক জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে যাতায়ত করে থাকেন। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের জন্যে মাত্র ৭০০ আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপর দিয়ে দৈনিক ৪৮টি ট্রেন চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে মাত্র ১২টি ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে।

অধিক যাত্রী চাপ সামাল দিতে এবং রেলওয়ের রাজস্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে চলাচলকারী সবকটি আন্তঃনগর ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতি ও ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলপথে একটি আন্তঃনগর স্পেশাল ট্রেন প্রদানের দাবি জানান তিনি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রাজিব হাসান চৌধুরী পাপ্পু জানান, ঢাকা চট্টগ্রামের পরে সবচেয়ে ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন। সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আমরা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে দিয়ে থাকি। রেলওয়ে সংস্কার করে আমাদের যে দাবি সে দাবি যেন মেনে নেয়া হয়।

বি-বাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের এই বি-বাড়িয়া স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। বি-বাড়িয়াতে প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার লোক আসা যাওয়া করে। এইখানে প্রায় ছয় জোড়ার ট্রেন যাত্রা বিরতি দেয়। এছাড়া নন স্টপেজ মিলিয়ে প্রত্যেকদিন প্রায় ২৪ জোড়া ট্রেন আসা যাওয়া করে। আমরা যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে টিকেট সরবরাহ করতে পারি না। এতে করে আসন বিহীন টিকেটে যাত্রীদের আসা-যাওয়া করতে হয়। তাদের এই আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আগেই অবগত করেছি। এখন আবারো পুনরায় অবগত করব।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূইয়া ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফর হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পরে আন্দোলনরতদের দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার আশ্বাস দিলে রেলপথ থেকে অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।