কলকাতায় হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা দিনদিন কমছে। শুধু কলকাতা নয়, হলুদ গাড়িটির সঙ্গে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকের রয়েছে নানা স্মৃতি। গত এক দশক ধরে আধুনিক সব গাড়ি আর ক্যাব সার্ভিসের ভিড়ে হলুদ ট্যাক্সি এখন বিলুপ্তির পথে।
এক সময়ের আভিজাত্যের চিহ্ন এই ট্যাক্সিকে টিকিয়ে রাখতে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে বেসরকারি একটি সংস্থা। এতে হলুদ ট্যাক্সিকে নতুন করে রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। ভারতের প্রাচীনতম শহর কলকাতার রাস্তায় ১৯৬২ সাল থেকে চলছে হলুদ গাড়িটি। এক সময় কলকাতার আভিজাত্যের প্রতীক ছিল অ্যাম্বাসাডার গাড়ি। পরবর্তীতে সেই অ্যাম্বাসাডারকে গণপরিবহন হিসেবে হলুদ ট্যাক্সিতে রূপান্তর করা হয়। হলুদ ট্যাক্সির সঙ্গে কলকাতা শহরের রয়েছে অন্যরকম এক সখ্যতা। এই ট্যাক্সি ঘিরে এখানকার মানুষের কত শত স্মৃতি। শুধু কলকাতাবাসী নয়, শহরটিতে এসেছেন আর হলুদ ট্যাক্সিতে ওঠেননি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন।
সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনের অসংখ্য কালজয়ী ছবিতেও দেখা মেলে এই হলুদ ট্যাক্সির। তবে নামিদামি আর আধুনিক সব গাড়ির ভিড়ে স্মৃতিবিজড়িত এ ট্যাক্সি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।
ডিজেল চালিত কলকাতা শহরের অন্যতম জনপ্রিয় এই গণপরিবহন প্রস্তুতকারী সংস্থা হিন্দু মটর। দশ বছর আগেও কলকাতায় এক লাখের বেশি ট্যাক্সি দেখা গেলেও সে সংখ্যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজারে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালের মে মাসে গাড়ি উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এদিকে শহরের পরিবহন আইন অনুযায়ী, ১৫ বছরের পুরানো কোনো গাড়ি সড়কে চলতে দেয়া হয় না। নতুন করে উৎপাদন না হওয়ায় প্রতিদিনই অনেক গাড়ির রুট পারমিট বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন গাড়ির অ্যাপ সার্ভিস প্রতিযোগিতা। তাই এক সময়ের আভিজাত্যের চিহ্ন হলুদ ট্যাক্সি আজ বিলুপ্তির পথে।
২০/০২/২০২৫; সুরমা টিভি ২৪; সুমাইয়া।