, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিয়ানীবাজারে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষক নেতৃবৃন্দের জিম্মায় হস্তান্তর : অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ১১:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪১০ Time View

সুরমা টিভি ২৪ ডেস্কঃ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলাধীন বিয়ানীবাজারের পল্লীতে অবরুদ্ধ এক প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের জিম্মায় হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ।

জানা যায়, অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নানা অনিয়ম ও এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ ছিলেন। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অসদাচারণ, শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ, বিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্তগ্রহণ-সহ নানা অভিযোগ রয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী বরাবর অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ তদন্ত করেন এবং আচরণগত ত্রুটি পরিবর্তনের নির্দেশনা দেন।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুর থেকে শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানকে নিজ কার্যালয়ে অবরুব্ধ করে রাখে। এ সময় এলাকার মুরব্বি, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সন্ধ্যার পর শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবক ও স্থানীয় মুরব্বিদের আলোচনার পর এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ উদ্ধারকৃত প্রধান শিক্ষককে দেখতে থানায় যান। এ সময় প্রধান শিক্ষক জানান, খণ্ডকালীন তিন জন শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তিনি পরিস্থিতির শিকার। পরে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে থানা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। আকস্মিক ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধারকৃত প্রধান শিক্ষককে ইউএনও-র নির্দেশে বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের আহবায়ক মো: আতাউর রহমান ও বাশিস সেক্রেটারি অসীম কান্তি তালুকদার-এর জিম্মায় দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ মুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ললিত মোহন বিশ্বাস ও পাতন আব্দুল্লাহপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের। এ সময় অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না আবেদনকারী শিক্ষকের ছুটি মঞ্জুর করেন। প্রাথমিক আলোচনা শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তাজনিত কারণে ঐ রাতেই প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান-কে বিশ্বনাথে তাঁর পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন।
পরদিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শালেশ্বর এলাকা থেকে মুরব্বি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের আচরণগত ও স্থানীয় ইস্যুকেন্দ্রিক। প্রধান শিক্ষক ছুটিতে আছেন। আপাতত রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন সহকারি প্রধান শিক্ষক। তদন্তক্রমে আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বিয়ানীবাজারে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষক নেতৃবৃন্দের জিম্মায় হস্তান্তর : অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা

Update Time : ১১:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুরমা টিভি ২৪ ডেস্কঃ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলাধীন বিয়ানীবাজারের পল্লীতে অবরুদ্ধ এক প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের জিম্মায় হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ।

জানা যায়, অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নানা অনিয়ম ও এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ ছিলেন। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অসদাচারণ, শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ, বিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্তগ্রহণ-সহ নানা অভিযোগ রয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী বরাবর অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ তদন্ত করেন এবং আচরণগত ত্রুটি পরিবর্তনের নির্দেশনা দেন।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুর থেকে শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানকে নিজ কার্যালয়ে অবরুব্ধ করে রাখে। এ সময় এলাকার মুরব্বি, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সন্ধ্যার পর শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবক ও স্থানীয় মুরব্বিদের আলোচনার পর এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ উদ্ধারকৃত প্রধান শিক্ষককে দেখতে থানায় যান। এ সময় প্রধান শিক্ষক জানান, খণ্ডকালীন তিন জন শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তিনি পরিস্থিতির শিকার। পরে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে থানা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। আকস্মিক ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধারকৃত প্রধান শিক্ষককে ইউএনও-র নির্দেশে বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের আহবায়ক মো: আতাউর রহমান ও বাশিস সেক্রেটারি অসীম কান্তি তালুকদার-এর জিম্মায় দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ মুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ললিত মোহন বিশ্বাস ও পাতন আব্দুল্লাহপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের। এ সময় অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না আবেদনকারী শিক্ষকের ছুটি মঞ্জুর করেন। প্রাথমিক আলোচনা শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তাজনিত কারণে ঐ রাতেই প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান-কে বিশ্বনাথে তাঁর পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন।
পরদিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শালেশ্বর এলাকা থেকে মুরব্বি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের আচরণগত ও স্থানীয় ইস্যুকেন্দ্রিক। প্রধান শিক্ষক ছুটিতে আছেন। আপাতত রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন সহকারি প্রধান শিক্ষক। তদন্তক্রমে আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।