, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

আসিফ নজরুল বলেছেন অযথা সময়ক্ষেপণ করে সরকারে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৫:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪১২ Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সৌজন্যে
ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, অযথা সময়ক্ষেপণ করে সরকারে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই তাঁদের। তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র মেরামতের মৌলিক শর্ত পূরণ করতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কারগুলো অতি জরুরি, সেগুলো করার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলে যেতে চান।

আজ শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গতকালই প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই কমিশনগুলো হলো সংবিধান, বিচার, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে তিনভাবে বাস্তবায়নের কথা আছে বলে উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, একটি হলো আশু করণীয় (সংবিধান সংস্কার কমিশনের আশু করণীয় নেই)। আরেকটি হলো মধ্যমেয়াদি এবং একটি হলো দীর্ঘমেয়াদি। দীর্ঘমেয়াদিগুলো নির্বাচন–পরবর্তী সরকার করবে। আশু করণীয়গুলোও পরিষ্কার, তাঁরা আশা করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের সাপেক্ষে নির্বাচনের আগেই করা হবে। আর মধ্য মেয়াদিগুলো নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশনের আশু কিছু সুপারিশের কথা তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া বাকি পাঁচটি কমিশন আশু করণীয়ও দিয়েছে। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে কি হবে না, তা রাজনৈতিকগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে কবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। যদি তারা রাজি থাকে, তাহলে রোজার মধ্যেও আলোচনা চলবে।

সংস্কার কমিশনের আশু করণীয়গুলো বাস্তবায়ন করতে কত দিন লাগতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আশু করণীয় ইতিমধ্যে কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে আশু করণীয় ছয় মাসের মধ্যেও বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিবেচনায় আশু করণীয়ের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ এক মাসের মধ্যেই করা সম্ভব।

আশু করণীয়গুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করা সম্ভব কি না, জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, আশু করণীয়র ক্ষেত্রে নির্বাচন–সংক্রান্ত যেসব বিষয় আছে, সেগুলো অবশ্যই ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করে। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধন কমিশনের ক্ষেত্রেও ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করে।

নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে, এটি বলার অধিকার অবশ্যই তাদের আছে। আর নির্বাচনের সময়রেখা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে তাঁর প্রেস সচিব বারবার পরিষ্কার করেছেন যে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অথবা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপিও একটি ঘোষণাপত্র (খসড়া) তৈরি করেছে। তারা বলেছে, সেটি তাদের জোটসঙ্গীদের দিয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সেটি চূড়ান্ত হলে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বসবে। ছাত্রনেতারাও যথেষ্ট সংযম, ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি আশা করেন, এ প্রক্রিয়া বেগবান করার চেষ্টা করা হবে। কারণ, এটা আইনি দলিল নয়, রাজনৈতিক দলিল, ঐক্যের দলিল।

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সরকারের ছয় মাসের মাথায় পতিত স্বৈরাচারের লোকজন ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের কারণে, নাকি সরকারের দুর্বলতার কারণে এটি হচ্ছে? জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সহনশীলতা, অবাধ মতপ্রকাশের পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে সরকারের অসীম শ্রদ্ধাবোধের কারণে এগুলো হচ্ছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

তথ্যসূত্র : সংগৃহীত

Popular Post

আসিফ নজরুল বলেছেন অযথা সময়ক্ষেপণ করে সরকারে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই

Update Time : ০৫:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সৌজন্যে
ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, অযথা সময়ক্ষেপণ করে সরকারে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই তাঁদের। তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র মেরামতের মৌলিক শর্ত পূরণ করতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কারগুলো অতি জরুরি, সেগুলো করার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলে যেতে চান।

আজ শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গতকালই প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই কমিশনগুলো হলো সংবিধান, বিচার, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে তিনভাবে বাস্তবায়নের কথা আছে বলে উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, একটি হলো আশু করণীয় (সংবিধান সংস্কার কমিশনের আশু করণীয় নেই)। আরেকটি হলো মধ্যমেয়াদি এবং একটি হলো দীর্ঘমেয়াদি। দীর্ঘমেয়াদিগুলো নির্বাচন–পরবর্তী সরকার করবে। আশু করণীয়গুলোও পরিষ্কার, তাঁরা আশা করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের সাপেক্ষে নির্বাচনের আগেই করা হবে। আর মধ্য মেয়াদিগুলো নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশনের আশু কিছু সুপারিশের কথা তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া বাকি পাঁচটি কমিশন আশু করণীয়ও দিয়েছে। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে কি হবে না, তা রাজনৈতিকগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে কবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। যদি তারা রাজি থাকে, তাহলে রোজার মধ্যেও আলোচনা চলবে।

সংস্কার কমিশনের আশু করণীয়গুলো বাস্তবায়ন করতে কত দিন লাগতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আশু করণীয় ইতিমধ্যে কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে আশু করণীয় ছয় মাসের মধ্যেও বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিবেচনায় আশু করণীয়ের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ এক মাসের মধ্যেই করা সম্ভব।

আশু করণীয়গুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করা সম্ভব কি না, জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, আশু করণীয়র ক্ষেত্রে নির্বাচন–সংক্রান্ত যেসব বিষয় আছে, সেগুলো অবশ্যই ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করে। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধন কমিশনের ক্ষেত্রেও ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করে।

নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে, এটি বলার অধিকার অবশ্যই তাদের আছে। আর নির্বাচনের সময়রেখা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে তাঁর প্রেস সচিব বারবার পরিষ্কার করেছেন যে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অথবা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপিও একটি ঘোষণাপত্র (খসড়া) তৈরি করেছে। তারা বলেছে, সেটি তাদের জোটসঙ্গীদের দিয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সেটি চূড়ান্ত হলে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বসবে। ছাত্রনেতারাও যথেষ্ট সংযম, ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি আশা করেন, এ প্রক্রিয়া বেগবান করার চেষ্টা করা হবে। কারণ, এটা আইনি দলিল নয়, রাজনৈতিক দলিল, ঐক্যের দলিল।

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সরকারের ছয় মাসের মাথায় পতিত স্বৈরাচারের লোকজন ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের কারণে, নাকি সরকারের দুর্বলতার কারণে এটি হচ্ছে? জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সহনশীলতা, অবাধ মতপ্রকাশের পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে সরকারের অসীম শ্রদ্ধাবোধের কারণে এগুলো হচ্ছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

তথ্যসূত্র : সংগৃহীত