অনলাইন নিউজ ডেক্স :
লামিনে ইয়ামালের পায়ে যেন মেসি-ম্যারাডোনা ভর করেছে। আলাভেসের বিপক্ষে গতকাল রাতে এই ১৭ বছর বয়সীর খেলা দেখলে যে কেউই এই কথার সঙ্গে একমত হবেন। না, চোখ ধাঁধানো কোনো গোল করেননি ইয়ামাল। বুদ্ধিদীপ্ত কোনো অ্যাসিস্টও নয়। এরপরও এই স্প্যানিশ উইঙ্গারকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। ইয়ামালের পায়ে যে ফিরে এসেছে দুই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি ও দিয়েগো ম্যারাডোনার দুই ঐতিহাসিক গোলের স্মৃতি।
ফুটবল গেমের মতো একের পর এক ডিফেন্ডারকে তো এভাবে এই দুই কিংবদন্তিই ছিটকে ফেলে ফুটবল ইতিহাসের সেরা দুই গোল করেছিলেন।বার্সেলোনায় লামিনে ইয়ামালকে মেসির উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে। লামিনে ইয়ামালকে বার্সেলোনায় লিওনেল মেসির উত্তরসূরি ভাবতে আপত্তি করবেন না কেউই। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই যেসব অবিশ্বাস্য কাণ্ডকারখানা করে চলেছেন, সেই বয়সে মেসিও এতোটা পারেননি। এই বয়সেই কাতালান জায়ান্টদের আক্রমণভাগে অপরিহার্য হয়ে উঠেছেন। তার ড্রিবলিং, বুদ্ধিদীপ্ত পাস আর দৌড় দেখলে মেসির কথাই মনে পড়ে। ফলে প্রতিটি ম্যাচের পরেই বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে তুলনাও অনিবার্যভাবে চলে আসে।গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) আলাভেসের বিপক্ষে বার্সেলোনার ১-০ গোলের জয়ের ম্যাচে ইয়ামালের কীর্তি ফের মেসি-ম্যারাডোনার সঙ্গে তার তুলনা টানতে বাধ্য করেছে।
ম্যাচটায় যদিও বার্সা জয় পেয়েছে লেভানদোভস্কির গোলে, কিন্তু আলো কেড়ে নিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী ইয়ামাল।ম্যাচের শুরুর দিকেই আলাভেসের খেলোয়াড়দের নাচিয়ে মাঠে উপস্থিত দর্শকদের বিস্ময় উপহার দিয়েছেন ইয়ামাল। নিজেদের অর্ধে বল পাবার পর ড্রিবলিংয়ে একে একে আলাভেসের সাত খেলোয়াড়কে পরাস্ত করেছেন তিনি। তার এই ড্রিবলিং ম্যারাডোনার সেই বিখ্যাত গোল অব দ্যা সেঞ্চুরি এবং গেতাফের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে ১৯ বছর বয়সী মেসির বিখ্যাত গোলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
আলাভেসের বিপক্ষে ম্যাচের পর ফ্লিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এটার (তুলনা) ভক্ত নই। লামিনে (ইয়ামাল) অসাধারণ। সে আজ যা করেছে, অনেক সময়ই এটা অবিশ্বাস্য। আমি অনেক খুশি যে সে বার্সেলোনার হয়ে খেলে। এটা সত্যিই অসাধারণ ব্যাপার।
আলাভেসের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ২১ বার ড্রিবলিংয়ের চেষ্টা করে ১১বার সফল হয়েছেন ইয়ামাল। ২০০৫-০৬ সালে মেসি রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে ২০বার ড্রিবল করেছিলেন। তারপর এটিই বার্সেলোনার কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ ড্রিবলিংয়ের ঘটনা।
ইয়ামাল যেভাবে দুর্দান্ত সব কীর্তিতে প্রতিপক্ষকে তার ছায়ায় হারিয়ে যেতে বাধ্য করেন, তারও প্রশংসা করেছেন ফ্লিক, ‘১৭ বছর বয়সী হিসেবে, সে অবিশ্বাস্য করছে এবং প্রত্যেক ম্যাচেই ভালো করছে। এবং প্রতিপক্ষরাও খেলার জন্য সহজ নয়। তারা শক্তিশালী, ভালো রক্ষণ সামলাচ্ছিল, তারা তাকে আক্রমণের চেষ্টা করেছে, আক্রমণাত্মক ছিল, কিন্তু সে ভাল করেছে। আমি এটা পছন্দ করছি।
এই জয়ে বার্সেলোনা শীর্ষ দুইয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে। রিয়ালের সঙ্গে তাদের ব্যবধান এখন মাত্র ৪ পয়েন্ট। লেভানদভস্কিও ১৮তম গোল করে পিচিচি জয়ের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কোপা দেল রে’র কোয়ার্টার ফাইনালে ভ্যালেন্সিয়ার মুখোমুখি হবে বার্সা।