সুরমা টিভি ২৪ ডেস্কঃ বাঙালি জাতিসত্তার মুক্তির আকাঙ্ক্ষার মাস শুরু হলো আজ। বাঙালির ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি। আজ থেকে ধ্বনিত হচ্ছে সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’। মাসজুড়ে বাঙালি জাতি ভালোবাসা জানাবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের।
১৯৫২ সালের এই মাসে বাঙালি তরুণরা বুকের রক্ত ঢেলে মাতৃভাষার অধিকারকে সর্বজনীন মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের আত্মবলিদানের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্নও জেগে ওঠে, যা এই জাতিকে পরবর্তী ধাপে পথ দেখিয়েছে।
৫২’র ভাষা আন্দোলনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নামেন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত, রফিকসহ পুরো ছাত্রসমাজ। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা। পরে এই অর্জনের পথ ধরেই শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং এর ফলে একাত্তরে নয় মাস পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন-সার্বভৌম একটি দেশ, বাংলাদেশ।
‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’টি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয়।
প্রতিবছর ভাষার মাসের প্রথম দিনের বড় আকর্ষণ একুশে গ্রন্থমেলা। আগামীকাল শনিবার বিকাল ৩টায় মেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
চলতি বছরে আয়োজিত এ মেলার রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে লাল, শোকের প্রতীক হিসেবে কালো এবং আশার প্রদীপ হিসেবে চিরকালীন সাদা।
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপটটাও ভিন্ন। এবারের অমর একুশে মেলায় গণ অভ্যুত্থানের নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলায় থাকছে ‘জুলাই চত্বর’। মেলায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হবে গণঅভ্যুত্থানকে।
[প্রঃ সুরমা টিভি ২৪/ ১লা ফেব্রুয়ারি / হাবিবুর রহমান]