মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে জান্তা সরকার। বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের বৈধতা নিশ্চিত করতে চায় জান্তা। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্বাচনের পরিকল্পনা দেশটির গৃহযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের জনগণের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছিল সামরিক জান্তা। তখন থেকে দেশটি একটি গৃহযুদ্ধের মধ্যে আটকা পড়ে। জান্তা বাহিনী ও বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে জান্তা সরকার। আর এ নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের বৈধতা নিশ্চিত করতে চান তারা। গত দুই মাসে, জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নির্বাচনের পরিকল্পনা শেয়ার করে আসছে। ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে একটি জনগণনাও প্রকাশ করা হয়। তারা নির্বাচনের জন্য দেশের কিছু অংশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ঘোষণা দেয়।
তবে, মিয়ানমারের বেশিরভাগ অংশে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোতে ভোটগ্রহণ সম্ভব হবে না। এর ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া একটি নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে।
নির্বাচনের কোনো নির্ধারিত তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। তবে জান্তা প্রায় ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে ভোটগ্রহণ করতে চায়। যেখানে বেশিরভাগ বিরোধী দল নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র জান্তা-সমর্থক দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে। অনেক বিরোধী গোষ্ঠী, বিশেষ করে জাতিগত গেরিলা বাহিনীগুলো এই নির্বাচনের পরিকল্পনাকে ধোঁকাবাজি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। একইসঙ্গে তারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে তাদের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচন নতুন করে রক্তপাতের কারণ হতে পারে। কারণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নির্বাচনী কেন্দ্র এবং প্রার্থীকে আক্রমণ করার চেষ্টা করতে পারে। ফলে তা দেশের জনগণের জন্য আরও বিপদের কারণ হবে।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান জান্তা সরকারকে নির্বাচনের পরিবর্তে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু জান্তা তাতে সাড়া দিচ্ছে না। উল্লেখ্য, বর্তমানে গুরুতর খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। যেখানে ১ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন।
৩১/০১/২০২৫; সুরমা টিভি ২৪; সুমাইয়া।