নানা সমালোচনা ও বিতর্কের পর গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সম্ভাব্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ফক্স নিউজের সাবেক এই উপস্থাপক ও আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দেন। তবে এর পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে।অভিযোগ উঠতে থাকার প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ভোটাভুটিতে হেগসেথের নিয়োগ চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে অবশেষে তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। অবশ্য, সিনেটে পক্ষে–বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় নিয়োগ চূড়ান্ত করতে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সকে ভোট দিতে হয়।
যৌন নিপীড়ন, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্ত্রীকে নির্যাতনসহ হেগসেথকে নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তাঁকে নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্কের বিষয়গুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক:
অভিজ্ঞতার অভাব
আফগানিস্তান ও ইরাকে এবং কিউবার কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে মার্কিন বন্দিশালায় দায়িত্ব পালন করেছেন হেগসেথ। এখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর ১৩ লাখ সক্রিয় সদস্য ও সেনাবাহিনীর জন্য কাজ করা প্রায় ১০ লাখ বেসামরিক মানুষকে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁদের নেতৃত্ব দেওয়াই শুধু নয়, এ খাতের ১ লাখ কোটি ডলারের বিশাল বাজেটও সামলাতে হবে তাঁকে।অনেকে সমালোচনা করে বলছেন, এত বড় কর্মী বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হেগসেথের নেই। আইনপ্রণেতাদের হেগসেথ নিজেই বলেছেন, তাঁর সর্বোচ্চ ১০০ জনকে নেতৃত্ব দেওয়ার ও ১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বরাদ্দ সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে।
সামরিক নিয়মকানুনের বিরোধিতা
বছরের পর বছর যুদ্ধ ক্ষেত্রে নারীসেনা মোতায়েনের কঠোর বিরোধিতা করে এসেছেন হেগসেথ। এ নিয়েও তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। এ ছাড়া অতীতে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগের সমালোচনা করতে দেখা গেছে। এমনকি তিনি তাঁর সর্বশেষ বইতে প্রশ্ন করেছেন যে শীর্ষ মার্কিন জেনারেল কৃষ্ণাঙ্গ বলেই কি এ পদ পেয়েছেন কি না।অবশ্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির পর সিনেটরদের সমর্থন পেতে এমন অবস্থান থেকে পিছু হটেন হেগসেথ। তিনি রিপাবলিকান সিনেটর জনি আর্নেস্টের মতো সেনা কর্মকর্তাদের সমর্থন পান। প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির রিপাবলিকান সদস্য আর্নেস্ট। এ কমিটিতে থাকা ১৪ রিপাবলিকান সদস্যের ১৩ জনই হেগসেথকে সমর্থন দেন। তবে কমিটিতে থাকা ডেমোক্র্যাটদের কেউ সমর্থন দেননি।
২৭/০১/২০২৫; সুরমা টিভি ২৪; সুমাইয়া।